আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় পেশা উন্নয়নে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানসমূহ
Table of Contents
পেশা উন্নয়নে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানসমূহ
পেশা উন্নয়নে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানসমূহ
কর্মীর পেশা উন্নয়নের বিষয়টি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে পেশা উন্নয়নে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানগুলোর বর্ণনা করা হলো:
বংশগত প্রভাব (Genetic influence):
প্রত্যেক মানুষের জীবনে বংশগত কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। এই সব বৈশিষ্ট্য ব্যক্তিক চিন্তাধারা এবং আচরণের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই কোনো ব্যক্তির পেশা নির্বাচনের সময় তার পিতা-মাতা বা পূর্ব পুরুষের চিন্তা-ভাবনা, আবেগ-অনুভূতি, অভ্যাস ইত্যাদি প্রভাব বিস্তার করে ।
পারিবারিক সংস্কৃতি (Family culture):
একজন ব্যক্তির পারিবারিক পরিমন্ডল তার পেশা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পারিবারিক চিন্তা-চেতনা, শিক্ষা, আবেগ-অনুভূতি, অভ্যাস ইত্যাদি একজন ব্যক্তির পেশা নির্বাচনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অবদান রাখে। যেমন: কেউ যদি শিক্ষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করে বেড়ে ওঠে তাহলে বড় হয়ে তার শিক্ষক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আবার কেউ যদি ব্যবসায়িক পরিবারে জন্মগ্রহণ করে বেড়ে ওঠে তবে তার ব্যবসায়ী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে।
সহজাত প্রবৃত্তি (Natural instrument):
জন্মগত বা স্বভাবগতভাবেই অনেকের ভেতরে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য বা প্ৰতিভা লুকায়িত থাকে। ঐ বৈশিষ্ট্য বা লুকায়িত প্রতিভাই সেই ব্যক্তির পেশা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে। যেমন জন্মগতভাবে কোনো কোনো ব্যক্তি সঙ্গীতে ভালো হয় এবং এই সঙ্গীতের সাধনা করলে বড় হয়ে ঐ ব্যক্তি সঙ্গীতশিল্পী হতে পারে।
কেউ কেউ ছোট থেকেই অংকশাস্ত্রে ভালো হয় এবং চেষ্টা চালালে অংক শাস্ত্রেই সে নাম কুড়াতে পারে। অনেকে আবার খেলাধুলার প্রতি বিশেষ মনোযোগী হয় এবং খেলাধুলার মাধ্যমেই সে খ্যাতি অর্জন করতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্য (Mental health) :
মানসিক স্বাস্থ্য বা মানসিক যোগ্যতা ব্যক্তির পেশা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেক ব্যক্তি আছে যারা দুর্বল চিত্তের হওয়ায় বেশি মানসিক চাপ সহ্য করতে পারে না। তাই এই জাতীয় ব্যক্তির পক্ষে কঠিন ও সময়সাপেক্ষ কাজ করা সম্ভব না। মানসিক দৃঢ়তা না থাকলে ব্যক্তিজীবনে সফলতা অর্জন করা যায় না। মানসিক চাপ পেশা উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সাংঘাতিকভাবে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে।
শারীরিক স্বাস্থ্য (Physical health):
যে কোনো পেশায় উন্নতি করতে গেলে শারীরিক স্বাস্থ্য ও প্রফুল্ল মন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ সুন্দর দেহ সুন্দর মন ধারণ করে। সুন্দর দেহ ও প্রফুল্ল মনের অধিকারী ব্যক্তির ওপর যে কোনো দায়িত্ব অর্পন করলে সে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তা সমাধান করতে পারে। আবার কিছু কিছু পেশায় সু-স্বাস্থ্য না থাকলে কাজই করা যায় না। যেমন- সেনাবাহিনীতে কাজ করতে চাইলে নির্দিষ্ট শারীরিক গড়ন দরকার হয়। আবার নভোচারী হতে চাইলে রোগমুক্ত শরীর দরকার হয়।
ব্যক্তিত্ব (Personality):
ব্যক্তিত্বের সাথে পেশা উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। মানুষ যা ভাবে এবং যে ভাবে আচরণ করে তা তার ব্যক্তিত্বের বহিঃ প্রকাশ। ব্যক্তিত্বের গড়নের ওপর মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রণ, মূল্যবোধ, চিন্তা, ব্যবহারের ক্ষমতা, লক্ষ্য অর্জনে সংকল্পবোধ ইত্যাদি নির্ধারিত হয়।
স্মৃতিশক্তি (Memory):
স্মৃতিশক্তি পেশা উন্নয়ন অনেকটা চালিকাশক্তির মতো কাজ করে। উন্নত স্মৃতিশক্তির অধিকারী ব্যক্তি পেশাজীবনে সফল হয় এবং দুর্বল স্মৃতিশক্তির অধিকারী ব্যক্তি পেশাগত দিক থেকে বেশিদূর এগোতে পারে না । উন্নত স্মৃতি শক্তির অধিকারী ব্যক্তি পেশাগত দিক থেকে সফল হয় কারণ স্মৃতি থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিচার বিশ্লেষণ করে কাজে লাগিয়ে সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
মনোযোগ (Attention):
কাজে মনোযোগিতা পেশা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যে সব ব্যক্তি কাজে মনোযোগী তারা পেশা উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় খুব সহজেই সফলতা পায়। কারণ মনোযোগ ও আনুগত্যের সাথে কাজ করলে যে কোনো কাজেই সফলতা পাওয়া যায়।
আরও দেখুন :